♥ ♥ ♥ ღ ღ ღ বই……বই……বই ღ ღ ღ ♥ ♥ ♥

সিস্টার শিখা প্রতি বছর “নিজের সাথে কিছুক্ষন” নামে একটা report লিখতে দেন।আমদের সময় ও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। পুরো report  টা আমি লামিয়ার বড় বোন সাদিয়া আপুর টা copy/paste  করেছিলাম। শুধুমাত্র একটা প্রশ্নের উত্তর আমার নিজের ছিল। প্রশ্নটা হল,” তোমার প্রিয় ৫ টি বাংলা, ৫ টি ইংরেজী শব্দ লিখ।”

এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আমি অনেক চিন্তা করেছি।অনেক অনেক চিন্তা। বাংলা শব্দের প্রথম শব্দটি ছিল “মা”, দ্বিতীয় শব্দটি ছিল বই। 😀

হ্যাঁ,বই। আমার family member রা তো বলেই,ফামিলের সাথে বইগুলো যেন superglue দিয়ে চিপকায়ে দেওয়া হয়েছে। 😀

আমি মনে করি,শুধুমাত্র মা আর বই নিয়ে আমি সারা জীবন কাটিয়ে দিতে পারব। আমার মনে আছে , ছোটবেলায় আমি অতি আগ্রহ নিয়ে পড়াশুনা শিখেছিলাম কারন আমার নানুভাই , আমাকে বলেছিলেন পড়াশুনা শিখলে বই পড়া যায়। আমি মূলত বই পড়ার জন্যেই পড়াশুনা শিখেছি।

আমার এতটুকু জীবনে বই নিয়ে যে কত ঘটনা আছে,তা হয়ত গুনে শেষ করা যাবে না !!!!!!!!!!!!!!! তবুও যেগুলো মনে পড়ছে সেগুলো বলি………… আমার নানুভাই কতগুলো মোটামুটি জনপ্রিয় রুপকথার লেখক।আমার মনের চিপায় ছোটখাটো একটা কষ্ট আছে যে আমি তার বইগুলো সংগ্রহ করতে পারিনি। এখনও frnd-দের বাসায় গেলে উনার বইগুলো দেখলে অনেক ভালো লাগে আবার অনেক কষ্টও লাগে।তার লিখা “পাহাড়ি কন্যা” গল্পটা আমার alltym favourite……..এই গল্পের বইগুলোর সবগুলোর উৎসর্গ ছিলাম আমি।সেরকম একটি বইয়ের উৎসর্গে আমার নাম এসেছিল “আফসানা ফাইজা কামিল।”এবং কেমন করে জানি ওই বইয়ের ঐ page টা এখনও আমার কাছে আছে।

আমার বান্ধবীরা আমার বাসায় এলে অনেক অবাক হয়।কারন আমার বাসায় কোন বই নেই। কোন বই নেই মানে হচ্ছে, বই পড়ুয়াদের বাসায় যেরকম ঘটা করে book-shelf  থাকে।এবং ঘটা করে সেই book-shelf  ভর্তি করা হয় তার কোন ব্যাবস্থা নেই। আমার মা-বাবা আমার বই পড়া রোগ নিয়ে অত্যন্ত দুশ্চিন্তিত। তাই তারা যতদূর সম্ভব আমাকে বইয়ের থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা করে। তাছাড়া আমার মামার একটা বইয়ের দোকান আছে। তাই আমাকে কষ্ট করে কোন বই কিনতে হয়না। দোকান থেকে বইয়ের এনে পড়ে আবার দিয়ে দিই। তাই আমার বাসায় তেমন কোন বই নেই।

হ্যাঁ, বই আছে। এই বই থাকারও আরেক ইতিহাস। ক্লাস 4 থেকে আমি সেবা প্রকাশনীর বইয়ের প্রতি addicted হয়ে পড়ি। অবশ্যই আমার প্রথম step  ছিল তিন গোয়েন্দা। সেই 4 থেকে 7 পর্যন্ত তিন গোয়েন্দার প্রত্যেকটি ভলিউম আমি পড়ে শেষ করেছি। এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সাহায্য আমি পেয়েছি মামার দোকান থেকে। ১-৯৯ ভলিউম পর্যন্ত মোটামুটি আমি মুখস্ত করে ফেলেছিলাম। আমার তিন গোয়েন্দার রকিব হাসানের গল্পগুলোই বেশি ভালো লাগত। ৯৯-এর পর থেকে সব শামসুদ্দিন আঙ্কেল লিখা শুরু করেছিল, তাই পড়া বাদ দিয়েছি। এরপর দ্বিতীয় step- মাসুদ রানা। 7 এর মাঝখানে থেকে আমি মাসুদ রানা ধরলাম। এখন সমস্যা হচ্ছে ,মামা তো আমাকে মাসুদ রানা পড়তে দিবে না। এর মধ্যে আমি আবার পুরোপুরি addicted হয়ে গেছি। তাই বাধ্য হয়ে চুরিপন্থা অবলম্বন করলাম। চুরিপন্থা মানে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে বই কেনা। পুরো 7-8 আমি এই চুরি পন্থায় মাসুদ রানা পড়েছি। এবং এই বইগুলোই একমাত্র আমার বাসায় আছে। আমার কত বই যে আমি ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে। বইয়ের ভিতর নিয়ে পড়ার সময় কত যে ধরা খেয়েছি। এখন একটা ঘটনার কথা মনে পড়ল।

সময়টা ক্লাস-8 এর দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা। পরেরদিন বাংলা পরীক্ষা। রাত ৩ টা। আমি সামনে খাতার পাহাড়ের মাঝে harry potter and the goblet of fire লুকিয়ে পড়ছিলাম। তখন আবার আমার বাবা বাসায় ছিল। বাবা যে কখন উঠে এসে আমার পিছনে দাঁড়িয়েছে আমি খেয়াল করিনি। আমার তো পরীক্ষায় পাস করার ইচ্ছাই ছিল না। কারন আমি humanities এ পড়তে চেয়েছিলাম। তাই পুরোপুরি পড়াশুনা ছাড়া পরীক্ষাগুলো দিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু বাবা এসেই তো রেগে ভোম। বইটই ছিরে একাকার করে ফেললো আমি আব্বুর রাগের চেয়ে বেশি বইটা নিয়ে মন খারাপ করেছিলাম। কারন বইটা ছিল class-mate এর। যাই হোক পরে manage করে বইটা ওকে কিনে দিয়েছিলাম।

স্কুলে আমি প্রত্যেক ক্লাসে বই নিয়ে ধরা খেয়েছি। এই বই যে মিসরা কতবার seize করেছে!!!!!!! সেইদিন শুনলাম roseline miss নাকি 9 এর ক্লাস এ এরকম এক বই ধরা অভিযানের সময় আমার কথা বলছিল। শুনে অনেক ভালো লাগলো।

এইমাত্র পায়ের উপর লেপ টেনে নিলাম।এবং এই লেপের কিহিনীও মনে পড়ে গেল। আমার জন্যে একবার লেপ নামানো হলে সেটা ছয় মাসের আগে উঠানো হয়না। কারন লেপের নিচে mobile এর আলো দিয়ে চুরি করে বই পড়া আমার অভ্যাস। 😀

বই আমার সবচেয়ে প্রিয় উপহার। এই কথাটা কেউ জানে না যে বই উপহার পেলে আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হই। তার উপর বই যত স্বাস্থ্যবান হবে তত আমার আনন্দ বেশি হবে। আমার জীবনে আমি ২ বার বই উপহার পেয়েছি। একবার দিয়েছে বউমা। ২০০৪ সালে ১ম ডিসেম্বর মামার বিয়ে হয় এবং  reception হয় ২৪শে ডিসেম্বর। ঐদিন বউমা বাসায় এসে সবার আগে আমার হাতে বই ধরিয়ে দেয়। আমার কাছে one of the best memory হচ্ছে এই ঘটনা।

আরেকবার gift দিয়েছিল আশিক মামা। হুমায়ূন আহমেদ- এর কিছুক্ষন এবং কৃষ্ণপক্ষ। আমার সবচেয়ে favorite বইগুলোর মধ্যে দুইটি।

বইয়ের কথা বলতে হলে আরও বলতে হয় বইমেলার কথা। আমি গত ৩ বছর ধরে বইমেলায় যাইনি। বিশ্বাস করা কঠিন হলেও সত্যি যে আমি আমার lyf-এ মাত্র ২ বার বইমেলায় গিয়েছি। ক্লাস 6 এবং 7 -এ। 8,9-এ যাইনি কারণ ঐ বছরটা আমার পড়াশুনার জন্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ক্লাস 10 ও same……এই বছর তো ssc xm এ ছিল। তাছাড়া আমার মা-বাবা এবং নানুমনি আমার বই পড়া ভাল চোখে দেখেন না। তাই আমাকে still লুকিয়ে বই পড়তে হয়। 😦

এইটুকুই এখন মনে পরছে…আর কিছু লিখতেও ইচ্ছা করছে না।

 

2 thoughts on “♥ ♥ ♥ ღ ღ ღ বই……বই……বই ღ ღ ღ ♥ ♥ ♥

  1. আহারে………..:):)
    আর আমি গত বছর বইমেলা গেলাম ৪-৫ বার । প্রতিবার গিয়ে ঘুরে ঘুরে বই দেখি আর মনে মনে ভাবি সবগুলো বই কিনে নিতে পারতাম:)
    যাক সামনে আসছে বই মেলা এবার তো কোন পরীক্ষা নাই। এবার সময় করে যেয় এবং পারলে তোমার fndটাও নিয়ে যাইও………ওর জন্য বইমেলায় রাক্ষস খোক্কসের গল্পের বই পাওয়া যাবে…..:P

Leave a comment